Mukti Juddho Wiki
Register
Advertisement

"মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।মুক্তিযোদ্ধা তথা জাতির বীর সন্তানেরা কোন পরিবার বা গোষ্ঠীর নয় তারা পুরো বাঙ্গালী জাতির  অহংকার । "

শহীদ আবদুল মমিন (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[]

শহীদ আবদুল মমিনের জন্ম কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার সহিলপুর ইউনিয়নের পিপুইয়া গ্রামে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তাঁর বাবার নাম আবদুল মোতালেব এবং মায়ের নাম তৈয়বুন নেছা।

কর্মজীবন[]

আবদুল মমিন ১৯৭১ সালে পড়াশোনা করতেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের উচ্চমাধ্যমিক ক্লাসের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ভারতে যান। প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরে। তিনি বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[]

মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ঢাকায় আক্রমণের জন্য মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির নিয়ন্ত্রণ নেওয়াটা ছিল জরুরি। সামরিক দিক থেকে দাউদকান্দির অবস্থান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য যৌথ বাহিনীর দুটি দল দাউদকান্দি অভিমুখে অভিযান শুরু করে। একটি দল চৌদ্দগ্রাম-পরিকোট-লাকসাম অক্ষ ধরে যাত্রা রওনা হয়। অপর দল ৫ ডিসেম্বর রাজাপুর-জাফরগঞ্জ-চান্দিনা অক্ষ ধরে যাত্রা শুরু করে। ৭ ডিসেম্বর সকালে তাঁরা জাফরগঞ্জে পৌঁছায়। এখানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন আবদুল মমিনসহ স্থানীয় গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা। ওই দিনই তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইলিয়টগঞ্জের প্রতিরোধ ভেঙে চান্দিনার বেশির ভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নেন। এরপর যৌথ বাহিনী অগ্রসর হয় দাউদকান্দির দিকে। আর আবদুল মমিনসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা থাকেন ইলিয়টগঞ্জের প্রতিরক্ষায়। ১৩ ডিসেম্বর দাউদকান্দিতে যৌথ বাহিনী ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী; দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় ও আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। এ দিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচ্ছিন্ন একটি অংশ হঠাৎ ইলিয়টগঞ্জের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। আবদুল মমিনরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই দলকে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিহত করেন। এদিকে ইলিয়টগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রান্ত হয়েছেন শুনে দাউদকান্দিতে অবস্থানরত মিত্রবাহিনীর একটি অংশ ইলিয়টগঞ্জে এগিয়ে এসে গোলাগুলি করতে থাকে। গোলন্দাজ দলও গোলাবর্ষণ শুরু করে। মিত্রবাহিনীর এই গোলা এসে পড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর। এতে আবদুল মমিন ও তাঁর সহযোদ্ধারা পড়েন চরম সংকট ও বিভ্রান্তিতে। তাঁরা প্রথমে মনে করেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাঁদের আক্রমণ করেছে। সে জন্য তাঁরা নিজেদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে থেকে পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। পরে জানতে পারেন মিত্রবাহিনী গোলাগুলি বর্ষণ করছে। তখন তাঁরা নিজেদের জীবন বাঁচাতে ছোটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আবদুল মমিন যেখানে ছিলেন, সেখানে পাশেই ছিল একটি বড় ডোবা। তিনি সেই ডোবাকে নিরাপদ ভেবে সেখানে যাওয়ার সময় গোলার স্প্লিন্টার এসে লাগে তাঁর শরীরে। গুরুতর আহত হয়ে তিনি গড়িয়ে পড়েন ডোবার পানিতে। তখন সেখানে আর কেউ ছিল না। একটু পর নিভে যায় তাঁর জীবনপ্রদীপ। সেদিন আবদুল মমিনের সহযোদ্ধারা সবাই নিজেদের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হলেও তিনি শহীদ হন। তবে সহযোদ্ধা কয়েকজন আহত হন। অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাঁর সহযোদ্ধারা একত্র হন। তখন তাঁকে না পেয়ে তাঁরা খুঁজতে শুরু করেন। পরে ওই ডোবায় গিয়ে তাঁকে পান। এরপর সহযোদ্ধারা আবদুল মমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেন বাড়িতে। ওই এলাকাতেই ছিল তাঁর গ্রামের বাড়ি। তাঁকে সমাহিত করা হয় পারিবারিক কবরস্থানে।

পুরস্কার ও সম্মাননা[]

তথ্যসূত্র[]

বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়শ্রেণী:বীর প্রতীক বিষয়শ্রেণী:১৯৭১-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:১৯৭১-এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা

Advertisement